ধনীরা তাদের সন্তানদের কি শেখায় যা গরীব ও মধ্যবিত্তরা শেখায় না?



ধনীরা তাদের সন্তানদের কি শেখায় যা গরীব ও মধ্যবিত্তরা শেখায় না?


“ভালো করে লেখাপড়া কর, যাতে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে পার তাইলে তুমি ভালো চাকরি পাবা আর ভবিষ্যতে শুখে-শান্তিতে দিন অতিবাহিত করতে পারবা”

আমরা কম বেশি সবাই এইরকম কথা আমাদের বাবা-মায়ের কাছে থেকে শুনেছি। আমাদের বাবা-মায়ের দেয়া এই উপদেশ হয়ত আজ থেকে ২৫-৩০ বছর আগে আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে কাজে লাগতো কিন্তু বর্তমানে প্রতিনিয়ত খুব দ্রুত পরিবর্তনশীল পৃথিবীর জন্যে এটি খুবই ধ্বংসাত্মক একটি উপদেশ ।

কখনও ভেবে দেখেছেন কি? আমরা আমাদের জীবনের প্রায় ১৮-২০ বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাটাই।

এর কারন কি? 

যাতে আমরা শিক্ষা জীবন শেষ করে ভালো অংকের একটা অর্থ বা টাকা উপার্জন করতে সক্ষম হয়। কিন্তু পরিহাসের বিষয় হচ্ছে এটি যে আমাদের স্কুল কলেজে আমাদের এই অর্থ বা টাকা সম্পর্কে কিছুই শেখায় না। আমাদের স্কুল-কলেজ শুধু শিক্ষাগত আর পেশাদার দক্ষতার উপর গুরুত্ব দেয় কিন্তু অর্থনৈতিক দক্ষতার দিকে ফিরেও তাকায় না। এইজন্যেই দেখবেন অনেক ভালো ভালো পেশাদার মানুষ আছেন যারা স্কুল-কলেজে খুব ভালো রেজাল্ট করেছেন সাথে অনেক স্কিলও বিল্ড আপ করেছেন কিন্তু তার পরও শুধুমাত্র এই “Financial Literacy” না থাকার কারনে তারা অর্থনৈতিক ভাবে দৈনন্দিন জীবনে অনেক ভোগেন।

লেখকের ধনী বাবা আসলে তার বন্ধু মাইকের বাবা ছিল কিন্তু জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক জ্ঞান, এবং প্রত্যেকটা জিনিস অন্যভাবে ভাবা শেখাটা হয়েছিল ধনী বাবার কাছ থেকে। অপরদিকে, গরীব বাবা বলতে লেখক তার নিজের বাবাকেই বুঝিয়েছেন যে কিনা অনেক শিক্ষিত মানুষ ছিল; ভাল চাকরীও করতেন কিন্তু খুব বেশি “Financial Literacy” তার ছিল না।

রবার্টের শিক্ষিত বাবা বলতেন, ভাল পড়াশোনা করো, ভাল রেজাল্ট করো এবং ভাল একটা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করো; ধনী বাবা বলতেন ভালো প্রতিষ্ঠানের মালিক হতে।
দুজনই পড়াশোনাকে গুরুত্ব দিতেন কিন্তু একটু ভিন্নভাবে।


এখানে দুজনের তফাত ছিল একজন ভাল প্রতিষ্ঠানে কাজের কথা বলতেন, আরএকজন ভাল প্রতিষ্ঠানের মালিক হওয়ার কথা বলতেন। শিক্ষিত বাবা উৎসাহ দিতেন বুদ্ধিমান হতে, ধনী বাবা বলতেন, বুদ্ধিমান লোককে চাকরি দিতে।

দুই বাবাই কর্মজীবনের শুরুতে অর্থ ও পরিবার নিয়ে সংগ্রাম করেছিলেন, কিন্তু টাকাপয়সার ব্যাপারে তাদের দৃষ্টিভঙ্গী ছিল আলাদা।
একজন বলতেন, “অর্থের প্রতি ভালাবাসাই সমস্ত নষ্টের মূল”, অন্যজন বলতেন, “অর্থ যথেষ্ট না থাকাই সমস্ত অনিষ্টের কারণ”।এখান থেকে আমরা বুঝতে পারি আমাদের চিন্তাধারা আমাদের অনেকখানিই নিয়ন্ত্রণ করে।

এক বাবা কোনো এক কাজের ক্ষেত্রে বলেন, “কাজটি আমি করতে পারব না” আর একজন বলেন, “আমি কি কাজটা করতে পারব ??” একটি হল মত আর অন্যটি হল প্রশ্ন। একজন সমস্যাটাতেই ঢুকতে দিচ্ছে না, অন্যজন চিন্তা করতে বাধ্য করছেন।

একজন বিশ্বাস করতেন, তার বাড়িটাই তার সবথেকে বড় বিনিয়োগ ও সবচেয়ে বড় সম্পত্তি। অন্যজন বিশ্বাস করতেন, বাড়িটি তার লায়াবিলিটি বা দায় । আর যদি কারো বাড়িই তার সব থেকে বড় বিনিয়োগ হয় তবে বিপদ অবশ্যম্ভাবী। কারন অ্যাসেট হলো সেই গুলোই যেগুলো দিয়ে আমার টাকা আয় হয়, আর লায়াবিলিটি হল সেগুলো থেকে হয় টাকা খরচ হয় বা কোনো আয় হয়না। আর এক ভাবে বলা যায়, আমার উপস্থিতি ছাড়াই যে উৎসগুলো থেকে আমার জন্য টাকা আসে, সেগুলোই আমার অ্যাসেট।

চিন্তাধারায় এই ছোট ছোট তফাতগুলোই দিন শেষে বড় পার্থক্য গড়ে দেয়।

সহজ করে বললে এইটাই যে “Financial Literacy” আর “How money works” এই জ্ঞানটুকু ছাড়া আপনি এই দ্রুত পরিবর্তনশীল পৃথিবীর সাথে তাল মেলানর জন্যে মোটেও প্রস্তুত নন যতই আপনি ভালো জায়গায় কাজ করেন বা মোটা অংকের টাকা উপার্জন করেন না কেন। তাই এই “Financial Literacy” সম্পর্কে জানার জন্যেই এই বইটি পড়া খুবই দরকার।

শেষ করছি “Rich Dad, Poor Dad” বইয়ের লেখক Robert T. Kiyosaki এর একটা উক্তি দিয়ে…

“Winners are not afraid of losing. But losers are. Failure is part of the process of success. People who avoid failure also avoid success.”
― Robert T. Kiyosaki, Rich Dad, Poor

বইটির সূচিপত্র দেখে নিনঃ


  • বইয়ের নামঃ রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড
  • বইয়ের লেখকঃ রবার্ট তরু কিয়োসাকি।
  • পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৯৯ টি।
  • বইয়ের ধরনঃ আত্ন-উন্নয়নমূলক ‌।
  • পিডিএফ সাইজঃ ১৭ মেগাবাইট প্রায়।


👇 ডাউনলোড 👇
রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড pdf

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form